ভাব ও কাজ
(ক) যিনি ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনসাধারণকে নাচাবেন, তাকে কেমন হতে হবে?
উত্তর : যিনি ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনসাধারণকে নাচাবেন, তাকে নিঃস্বার্থ, ত্যাগী ঋষি হতে হবে।(খ) লেখক 'স্পিরিট' বা আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে বলেছেন কেন?
উত্তর : কর্মে শক্তি আনয়নের উদ্দেশ্যে লেখক 'স্পিরিট' বা আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে বলেছেন।
'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের লেখক কাজী নজরুল ইসলাম ভাব ও কাজের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করে বলেছেন মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ভাবকে জাগিয়ে তুলতে হবে। কিন্তু তার আগে সমস্ত কাজের বন্দোবস্ত করে রাখতে হবে। ভাবকে কাজের দাস হিসেবে নিয়োগ করে ভাবের সার্থকতা আনতে হবে। আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে হলে নিজের বুদ্ধি ও কর্মশক্তিকে জাগাতে হবে। তাহলে কর্মশক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তির ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য দেশকে উন্নতি ও মুক্তির দিকে নিয়ে যাবে।
(গ) উদ্দীপকটি 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের যে দিকটি নির্দেশ করে, তা বর্ণনা কর।
উত্তর : উদ্দীপকটি 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের কায়িক শ্রমের দিকটি নির্দেশ করে। 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধে লেখক ভাবকে পুষ্পবিহীন সৌরভ বলেছেন, যা অবাস্তব উচ্ছ্বাস মাত্র। কিন্তু কাজ জিনিসটা সল্ফপূর্ণরূপে বস্তু জগতের, যা ভাবকে কাজের দাস হিসেবে নিয়োগ দান করে। মানুষের কল্যাণের জন্য, মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে। কিন্তু তার আগে কার্যক্ষেত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। তা না হলে তারা জেগে উঠে উপযুক্ত কাজ বা দায়িত্ব না পেলে আবার ঘুমিয়ে পড়বে এবং তখন ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জাগানোর চেষ্টা করলেও জাগানো যাবে না। দেশকে উন্নতি ও মুক্তির পথে এগিয়ে নিতে হলে কোমর বেঁধে কাজে নেমে পড়তে হবে এবং নামার আগে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে কাজের ইতিবাচক ফল সম্পর্কে জানতে হবে। কাজের সম্ভাবনা-অসম্ভাবনার কথা আগে ভেবে কাজে নামলে ব্যক্তির উৎসাহ অনর্থক নষ্ট হয় না। উদ্দীপকেও এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কল্পলোকের জগৎ থেকে বাস্তবতা ভিন্ন এক জগৎ, যেখানে বড় হতে হলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। তাই লেখকও দেশের উন্নতি, মুক্তি ও মানুষের কল্যাণের জন্য ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কাজে তৎপর হওয়ার দিকটি নির্দেশ করেছেন।
(ঘ) 'কল্পনার জগতে হাবুডুবু না খেয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক'- মন্তব্যটি 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর।
উত্তর : 'কল্পনার জগতে হাবুডুবু না খেয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই মনুষ্যত্বের পরিচায়ক' বলেই লেখক বাস্তবধর্মী কাজে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। 'ভাব ও কাজ' প্রবন্ধের লেখক দেখিয়েছেন, ভাব ও কাজের পার্থক্য আসমান-জমিনের মতো। কাজ হলো মানুষকে কব্জায় বা আয়ত্তে আনার জন্য তার সবচেয়ে কোমল জায়গায় ছোঁয়া দিয়ে তাকে মাতিয়ে তুলে ইতিবাচক কাজের জন্য তৈরি করা।
Fuad
উত্তরমুছুন